বায়েজিদে রমরমা মাদক বাণিজ্য

প্রকাশিত: ১:০৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২৫

বিশেষ প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকায় মাদক বাণিজ্য এখন অনেকটাই প্রকাশ্যে রমরমা আকার ধারণ করেছে। দিনের আলোতেও ইয়াবা, গাঁজা, চোলাই মদ ও পাহাড়ি মদের বেচাকেনা চলে একাধিক স্পটে। এ অবস্থায় স্থানীয়রা বলছেন, যেন পুরো এলাকা পরিণত হয়েছে মিনি টেকনাফে।

 

 

 

গেল জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তোপে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হয়ে পড়ায় বায়েজিদ এলাকায় মাদক কারবারীরা পুনরায় দাপটের সঙ্গে মাঠে নামে। অনেকেই একাধিকবার গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁকফোকর ও রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় বেরিয়ে এসে আবারও শুরু করে তাদের ব্যবসা।

 

মাদক স্পটের তালিকা: সৈয়দপাড়া থেকে আমিন কলোনি

 

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দ পাড়া (কসাইপাড়া) এলাকায় অন্তত ১০টির বেশি সক্রিয় মাদক স্পট রয়েছে।নাসির ওরফে পাগলার স্পট,পাইক্কনি (পাখি) ও তার মেয়ের মাদক স্পট,লেংড়া আব্দুলের স্পট,ভান্ডারীর ছেলে ছক্কাইয়ার স্পট,বার্মায়ার স্ত্রী কালা পুচির স্পট,বার্মাইয়ার ছেলে নুরা পাগলার স্পট,পাগলা নাসিরের স্ত্রী রূপবানুর স্পট,জাহেদের স্ত্রী জ্জল্লনির স্পট (গাঁজার ডিলার),শুক্কুরের বউ কুলসুমার স্পট (চোলাই মদের ডিলার),ছমধাইয়া, মৌসুমী ও আবুল হোসেনের (চোলাই মদ ব্যবসায়ী) স্পট

 

 

একইভাবে রৌফাবাদ এলাকায়ও একাধিক সক্রিয় স্পট রয়েছে। মিয়ার পাহাড়ে গুন্ডুনির ও বিল্লাইয়ার স্পট, রেললাইন সংলগ্ন সখিনার বাড়িতে আরমানের স্পট, রৌফাবাদ রেলগেট সংলগ্ন নাসিরের স্পট। শুধু তাই নয়, মাদক সেবীদের জন্য স্থানীয়ভাবে “মন্নানের জোয়ার আসর” নামে পরিচিত জুয়ার আসরও রয়েছে সেখানে।

 

অক্সিজেন কয়লাঘর এলাকার শীতল ঝর্ণা ২ নং গলিতে নাসিমার স্পট (ইয়াবা ও গাঁজা) এবং পাঠানপাড়া এলাকার কালামিয়ার ছেলে রুবেলের মাদক ও জুয়ার স্পটও আলোচিত। বায়েজিদ থানা সংলগ্ন আমিন কলোনি এলাকায় আল-আমিনের নেতৃত্বে আরও কয়েকটি সক্রিয় ইয়াবা ও গাঁজার আসর রয়েছে।

 

 

খুচরা ব্যবসার দায়িত্ব দেওয়া হয় নারী ও তরুণদের হাতে, যাতে পুলিশি অভিযানে সহজে ছাড় পাওয়া যায়।গ্রেফতার হলেও মামলা পরিচালনার জন্য সিন্ডিকেট থেকে অর্থ ও আইনজীবী সরবরাহ করা হয়।স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিকভাবে যুক্ত কিছু ব্যক্তির ছত্রচ্ছায়ায় ব্যবসা নিরাপদ থাকে।

পুলিশি অভিযানের আগে খবর পৌঁছে যায়, যা প্রমাণ করে সিন্ডিকেটের ভেতরে “সোর্স” রয়েছে।প্রতিদিনের আয়ের একটি অংশ নিয়মিতভাবে যায় প্রভাবশালী মহল ও সিন্ডিকেট পরিচালকদের কাছে।

 

চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকায় মাদকের রমরমা বাণিজ্য কেবল স্থানীয় নয়, বরং নগরের জন্য একটি বড় হুমকি। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা, আইনের দুর্বলতা এবং প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় এই অপরাধচক্র দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে। অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে যা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।

উল্লেখ্য যে স্থানীয় প্রশাসনের বক্তব্য সহ বায়েজিদে মাদক নির্মূলে করণীয় কি কি তা নিয়ে অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতামত সহ থাকছে পর্ব -২ ।